
আমি জ্ঞানের শহর এবং আলী (আ:) এর দ্বার
মাওলানা শায়খের বাস্তবিকতা ও তত্ত্ব জ্ঞানের আলোকে এবং মাওলানা শেখ নূরজান মিরাহমাদির মাধ্যমে প্রদেয় শিক্ষার আলোকে
আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
A’udhu Billahi Minash Shaitanir Rajeem
Bismillahir Rahmanir Raheem
আমি বিতাড়িত শয়তানের থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি
পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
ওয়া আতিউল্লাহ আতিউর রসুলা ওয়া উলিল আমরি মিনকুম
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّـهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُم
উচ্চারণ : ইয়া আইয়ুহাল্লাযিনা আমানো অতিউল্লাহ ওয়া অতিউররাসূলা ওয়া উলিল আমরি মিনকুম ( সূরাহ আন নিসা : আয়াত ৫৯)
অনুবাদ: হে বিশ্বাসীগণ ! তোমরা আল্লহর আনুগত্য করো , রাসূলের আনুগত্য করো আর তোমাদের মধ্যে প্রাজ্ঞ নেতার আনুগত্য করো ।
( সূরাহ আন নিসা : আয়াত ৫৯)
সর্বদা আমার জন্য একটি অনুস্মারক আনা আবদূকা আজিজ ওয়া দাইফ ওয়া মিসকেন ওয়া জালিম ওয়া জাহল।মাদাদ ইয়া সায়্যেদি ইয়া রসুল আল করিম ইয়া হাবিব আল আজিম উনজুর হালানা ওয়া ইশফালানা ওয়া আবিদোনা দ্বি মাদাদিকুম ওয়া নাজরাকুম। মাদাদ ইয়া সায়্যেদি ইয়া সুলতানুল আউলিয়া মাওলানা শায়খ আবদুল্লাহিল ফয়েজাদ দাগেস্তানী, মাদাদ ইয়া সায়্যেদি ইয়া সুলতানুল আউলিয়া মাওলানা শায়খ মুহাম্মদ নাজিম আল হাক্কানী মাদাদ ইয়া সুলতানুল কুলুবিনা মাওলানা শাইখ হিশাম কাব্বানী। মাদাদ আল হাক্ক মাদাদ আল হাক্ক ইয়া হুজ্জাতুল্লাহি আল মুখলিস, উনজুর হালানা ওয়া ইশফালানা ওয়া আবিদোনা বাই মাদাদাকুম ওয়া নাজরাকুম।
আউলিয়াগনের আত্মা আল্লাহর কুদরাত (ক্ষমতা ) দ্বারা সজ্জিত । উপজাতগত ভাবে এটি ঐশ্বরিক জ্ঞান
ইনশাআল্লাহ সর্বদা আমার জন্য অনুস্মারক আমাদের জীবন তা’জিম আন নবী ﷺ,আল্লাহ তা ‘আলা সায়্যেদেনা মুহাম্মদ (ﷺ) কে যেই মহিমান্বিত সৌন্দর্য ও প্রেম ভালোবাসা দিয়ে সজ্জিত করেছেন তা ছড়িয়ে দেয়ার মধ্যে নিহিত ।এটি আমাদের জীবনে একটি সম্মান দেয় এবং এই প্রকৃত সত্যগুলি লিখছেন এমন ফেরেশতাদের সম্মান দেয়। তারা লেখক যারা কিতাব (বই) গঠন করে। তাদের তাশরীফ, এবং তাদের সম্মান সায়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর মাহাত্ম্যের নথিভুক্ত করার জন্য । সুতরাং, আমাদের কিতাব (বই) এর উপর আমাদের সত্তার উপর ইহার এক বিশাল মূল্য রয়েছে এবং ইহা আমাদের বাস্তবতার সমস্ত কিছুকে পরিবর্তন করে।
মহান আল্লাহ তা’ আলার মহত্ব ও মহিমান্বিত প্রতাপ এবং সেই উপহার যা সায়্যেদেনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর বাস্তবিক সত্যতা কে সজ্জিত করে থাকে।
(পবিত্র আল হাদিস এর আলোকে ) মাওলানা শায়খের অন্তর্দেশ থেকে বাস্তবিকতার মহাসমুদ্র কে ব্যক্ত করা যায় । যারা হলেন “বাব” অর্থাৎ বাস্তবিক সত্য ও জ্ঞানের দরজার তত্ত্বাবধায়ক। আত্মার সেই বাস্তবতায় প্রবেশের জন্য এবং তাদের সংগ্রামের ফলস্বরূপ এবং তাদের প্রচেষ্টার ফলে, তাদের আত্মা যে পরিমাণ শক্তির সাথে পরিচ্ছন্ন হচ্ছে, তার উপজাত হলো জ্ঞান।
আত্মা আধ্যাত্মিক শক্তির ও স্বর্গীয় জ্ঞানের অভাব বোধ করে থাকে এর কারণ তার রয়েছে অসীম শক্তির প্রস্রবণ , কুদরতের মহাসমুদ্রের নৈকট্যতার এবং যার মধ্যে ইহা ভ্রমণরত । ফেরেশতা ,শক্তি সবই হলো কুদরত (ক্ষমতা)।
আর আত্মা যেই কুদরতি শক্তি দিয়ে সজ্জিত হয় তার উপজাত ই হলো বাস্তবিক সত্যতা । এর মূল উদ্দেশ্য জ্ঞান নয়, মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লহর নৈকট্যতা ।
ঐশ্বরিক উপস্থিতি সায়্যেদেনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর অন্তর্দেশ এর মধ্যে নিহিত
আর আল্লাহর নৈকট্য হ’ল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্তর্দেশে । আপনাকে আল্লাহ তা’ আলার কাছে যেতে ও তার নিকটবর্তী হবার জন্য আপনাকে আল্লাহর নবী হতে হবে । কিন্তু আমরা আল্লাহর নবী নই !
তবে আল্লহ তা’ আলা ইহা সহজ করে দিয়েছেন সাইয়েদেনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর অন্তর্দেশ এ যাওয়ার জন্য এবং সেখানে আল্লাহ তা’আলার ঐশ্বরিক উপস্থিতি পাওয়া যাবে । আমাদেরকে আল্লাহর ঐশ্বরিক উপস্থিতির দিকে অনুপ্রবেশ এর জন্যে একটি প্রবেশদ্বার প্রদান করে থাকেন ।
আল্লাহ তা’আলা বলেন ” প্রত্যেক বাড়ির জন্য একটি সঠিক প্রবেশদ্বার থাকে , পেছনের দ্বার দিয়ে দিয়ে এসো না জানালা দিয়েও যাবে না , বাব্ব এর মধ্যে দিয়ে যাও ।”
নবী করীম (সাঃ) বলেছেন:
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : “أَنَا مَدِينَةُ الْعِلْمِ وَعَلَىٌ بَابُهَا، فَمَنْ أَرَادَ الْمَدِينَةَ فَلْيَأْتِ مِنْ بَاْبُهَا
ক্বালা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) “আনা মদিনাতুল‘ ইলমি ওয়া ‘আলিয়ুন বাবুহা, ফামান আরাদাল মদিনাতা ফালিয়া’তে মিন বাবুহা। (ঈমাম হাসান রাঃ )
“আমি জ্ঞানের শহর এবং আলী এর দ্বার / দ্বাররক্ষক, সুতরাং যে কেউ শহর থেকে চায় তাকে অবশ্যই তার দ্বার / দ্বাররক্ষক থেকে গ্রহণ করতে হবে “[আল-আওসাত ,ইমাম তিরমিযীর সহীহঃ হাদিস]
পবিত্র কুরআন সায়্যিদিনা মুহাম্মাদ (ﷺ) এর আত্মা থেকে অবিরাম ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে :
তারা আমাদের শিখিয়েছেন পবিত্র কোরআনের সবকিছু এবং তার অবস্থান যা অবিরতভাবে প্রবাহমান । ইহা শুধুমাত্র একটি কাগজে প্রকাশিত পবিত্র কিতাবই নয় । রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সময়ে কোনো বই ছিল না । রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ই হচ্ছেন চলমান কুরআন । কুরআন বেঁচে আছে, জীবনের বাইরে, হায়াতের সমুদ্রের (চিরকালীন) সৃষ্টির সমুদ্রেরও বাইরে। এর অবস্থান ও বাস্তবতা নবীজি (ﷺ) এর আত্মার অন্তর্দেশ থেকে অবিরামভাবে উদ্ভাসিত হচ্ছে ।
কোরআনের ৩০ টি পারা সূরাহ ফাতিহার ৭ টি আয়াতের মধ্যে অন্তর্নিহিত
সুতরাং, যখন তারা ক্বালব (হৃদয়) সমন্ধে শেখায়, ক্বালব (হৃদয়)শব্দটি ক্কাফ , লাম, বা, এই ত্রয়ের সম্মিলনে গঠিত । ক্কাফ, ওয়াল কুরআনিল মাজিদ।
সূরাহ আল ক্কাফ এর প্রথম আয়াতে উল্লিখিত :
ق ۚ وَالْقُرْآنِ الْمَجِيدِ ﴿١﴾
উচ্চারণ: ক্কাফ, ওয়াল কুরআনিল মাজিদ !
অনুবাদ : ক্কাফ, সাক্ষী মহিমান্বিত কোরআন !
সুতরাং, এটি বিজ্ঞানের সূত্রগুলির মতো। আপনি ক্বাফ সমান কোরআনিল মাজিদ রাখেন। এটাই হল সেই ক্বাফ যা পবিত্র কোরআনের সমস্ত অংশ ছিল। তারপরে ওলামাগণ শিক্ষা দিচ্ছেন যে সমস্ত কুরআন এই ৩০ পারাতে (অংশে) রয়েছে, লেজারের মতো এটি ৩০ পারাতে (অংশে)আসছে। এই ৩০ টি পারা , আপনি সূরাহ আল-ফাতিহাতে পাবেন। তাই , সূরাহ ফাতিহা সাতবার পাঠ করা পবিত্র কোরআনের সম্পূর্ণ তিলাওয়াতের পুরষ্কার নিয়ে আসে। কেবল তা-ই নয়, পবিত্র কোরআনের প্রতিটি আয়াত অবশ্যই এই সাতটি আয়াত এর মধ্যে নিহিত থাকতে হবে।
“আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন” (১: ২)
থেকেই হামদ ও প্রশংসা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের প্রতিটি আয়াত এসেছে।
﴾الْحَمْدُ لِلَّـهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴿٢
উচ্চারণ: ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ (১: ২)
অনুবাদ: সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে ।
কোরআনের প্রতিটি আয়াত (আয়াত) যা আল্লাহর প্রশংসা সম্পর্কে কথা বলে ,যা দয়া ও করুনার ঝর্ণাধারা থেকে উদ্ভাসিত হয়। কালাম (শব্দ) ব্যাখ্যা করতে পারে না হৃদয় যার প্রত্যক্ষদর্শনের সাক্ষী । সুতরাং, প্রকাশের প্রয়োজনে তাকে শব্দ সহযোগে একটি স্তরে নামাতে হয় । মহাসাগরের মতো – মহাসাগর কোথা থেকে আসছে? অবশ্যই তার উৎস ঝর্ণাধারা থাকতে হবে যা নায়াগ্রা জলপ্রপাতের মতো প্রবাহিত হয় এবং সেই সমুদ্রকে পরিণত করে। নায়াগ্রা জলপ্রপাতের মতো, ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’। (কুরআন ১: ২) ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ – এর হামদ, এবং পবিত্র কোরআনে প্রশংসা এবং বর্ণনার প্রতিটি মহাসাগর সেই আয়াতটি থেকে এসেছে। এটি কীভাবে সংশ্লেষিত হয়েছে তা নিয়ে তারা কথা বলে। এর অর্থ এই যে এই সাতটি আয়াতের প্রতিটি আয়াত, পবিত্র কোরআনের বাস্তবতার প্রতিটি মহাসাগর, সাতটি জলপ্রপাতের মতো আসবে এবং বাস্তবতার সমুদ্রকে ভরাট করবে।
ফাতিহা হচ্ছে ওয়াল হামদ এবং নবীজি (ﷺ) এর নাম হচ্ছে লিওয়াল হামদ (প্রশংসার পতাকা )
সূরাতুল হামদ এবং নবীজীর ﷺ নাম, তাঁর একটি নাম লিওয়াল হামদ। প্রশংসার পতাকা! যতক্ষণ না আল্লাহ এটিকে হৃদয় ও আত্মার মাধ্যমে প্রকাশ করতে শুরু করেন ততক্ষন পবিত্র কোরআন সৃষ্টির কেউই জানতে সক্ষম তবে না । আমরা দৈহিকতার কথা বলছি না, আমরা মালাকুত (স্বর্গীয়রাজ্য) নিয়ে কথা বলছি।
আত্মার জগতে, আল্লাহর তা’আলার চিরন্তন বাস্তবতা সাইয়্যিদিনা মুহম্মদের ﷺ জুহুর (উপস্থিতি) দিয়ে প্রকাশিত হয় ।সুতরাং, এর অর্থ এই যে, এই সমস্ত বাস্তবতা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মদ ﷺ এর আশীর্বাদযুক্ত ও পবিত্র জবানের মধ্য দিয়ে আসছে যার কারণে এই লিওয়াল হামদ উপাধি। ইহাই ক্বাফ , এবং আল্লাহ তা’আলার সমস্ত ইজ্জত এবং শক্তি (মহিমা) এবং পবিত্র কুরআনের অকল্পনীয় বাস্তবতা, যা লামকে সজ্জিত করে। ইহা লামকে মহিমান্বিত করে ।
ইহা সূরাহ ইয়াসীন থেকে প্রত্যেকটি আমর (নির্দেশনা ) এবং এরাদা (ইচ্ছা ) প্রদান করে থাকে ।
এই বাস্তবিক সত্যতার মধ্যেই দয়াময়ের (নির্দেশনা ) এবং এরাদা (ইচ্ছা ) নিহিত রয়েছে ।
সূরাহ ইয়াসীন এর ৮২ নম্বর আয়াতে উল্লিখিত :
﴾إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَن يَقُولَ لَهُ كُن فَيَكُونُ ﴿٨٢
উচ্চারণ: ইন্নামা আমরুহু ইযা আরাদা শাইয়ান আইয়াকুলা লাহু কুন্ ফায়াকুন । (সূরাহ ইয়াসীন)
অনুবাদ: আসলে যখন তিনি কোনো কিছুর ইচ্ছা করেন তখন তিনি শুধু বলেন হও, আর তখনই তা হয়ে যায় ।
যা বলতে চাই, এই জিহ্বা তা উচ্চারণ করবে । আমার বাস্তবতাগুলির মধ্যে আমি যা বলতে চাই না যা হবে আল্লহর ইচ্ছা এবং তা অভ্যন্তরে পরিচিত। ক্বাফ এবং লাম মিলে হয় ক্বুল যা আল্লহ তা’ আলার ঐশ্বরিক উক্তিতে পরিণত হয় ।
কোনো ফেরেশতা সেই ক্বুল কে বহন করতে পারে না। সাইয়্যদীনা মুহাম্মদ ﷺ ব্যতীত এমন কোন নবীই নেই যিনি সেই ক্বুল কে বহন করতে পারেন । সুতরাং, নবী ﷺ হলেন ক্বুলের প্রকাশ। আল্লহ তা’ আলার ঐশ্বরিক উক্তির প্রকাশ । আল্লাহ তা’আলার এই প্রাচীন জবান যা আদিতে ও যা অন্তে , যা আমরা জানি না । এই ক্কুল ও লাম ,বা এর প্রতি নির্দেশিত হয়ে থাকে । ইহাই ক্বালব (হৃদয়)।
সূরাহ ফাতিহা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর মধ্যে সন্নিবেশিত আর তা ১৯ টি হরফে ।
সমস্ত কিছুর গোপনীয়তা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর সেই চাবিতে রয়েছে ।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিমের ১৯ টি হরফ । আহলে বাইতের ১৯ টি হরফ : আলী (আ:), ফাতিমা (আ:), হাসান (আ:), হুসেন (আ:), মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ,সকলের প্রতি শান্তি ও বরকত বর্ষিত হউক । এই ১৯ টি অক্ষর এবং ১৯ , ওয়াল আউয়াল (প্রথম) ১ এবং ৯ ওয়াল আখির (শেষ)।
‘আওওয়ালা খলকিল্লাহ ওয়া খাতিমিন নবীয়ীন’। ” আমিই আল্লহর সৃষ্টির প্রথম এবং আমিই শেষ , আল্লাহ তা’আলার নবীদের সমাপ্তি (মোহর)।” সকল বাস্তবতা ও সত্যতা থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে নবীজি ﷺ এই ১৯ এর বাস্তবিক সত্যতা বহন করছেন।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ :كُنْتُ أَوَّلَ النَّبِيِّينَ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ
উচ্চারণ: আন আবি হুরায়রা (রা:) আন্না নবীআল্লাহি (সা : ) ক্বালা : কুন্তু আওয়ালাল নাবিয়ীনা ফিল খালকি ওয়া আখিরাহুম ফিল বা’সি।
আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত নবীজি ﷺ বলেছেন “আমি সৃষ্টিতে নবীদের মধ্যে প্রথম এবং পুনরুথানে শেষ নবী “
আহলুল বায়ত (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার) এই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দ্বারা সজ্জিত । এই ক্কুল , “বা ” কে তার ইজ্জত এবং তার মহিমা প্রদানের মাধ্যমে সজ্জিত করে থাকে। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর সবকিছু ও এর ক্ষমতা খুঁজে পাওয়া যায় “বা”
এর মধ্যে । তাই আমদের লেখার সমস্ত ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম’ ‘বা’-তে আছে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন “আমি বিশ্বাসীদের হৃদয়ে আছি।” (নবীজি ﷺ)
নবীজি ﷺ বলেছেন ” আমি জ্ঞান এর শহর ” যা নির্দেশ করে ক্বালব (হৃদয়)।
যার কথা আল্লাহ তা’আলা বলেন । ইহা হলো সেই পবিত্র বিশুদ্ধ ক্বালব (হৃদয়) ।
যা আমার বা আপনার ক্বালব (হৃদয়) নয়। ইহা স্বর্গের, স্বর্গীয় রাজ্যের ক্বালব (হৃদয়) যা
নবী কারীম ﷺ এর ক্বালব (হৃদয়) ।
مَا وَسِعَنِيْ لَا سَمَائِيْ ولا اَرْضِيْ وَلَكِنْ وَسِعَنِيْ قَلْبِ عَبْدِيْ اَلْمُؤْمِنْ
উচ্চারণ: মা ওয়াসি আনি লা সামায়ি ওয়াল আরদি লাকিনা ওয়াসি আনি ক্বালবি আবদী আল মু’মিন।
নবীজি ﷺ এর হাদিসে কুদসী থেকে বর্ণিত
আল্লাহ তা’আলা বলেন ” আমার বিশ্বাসী বান্দার অন্তর ছাড়া স্বর্গ ও পৃথিবীর কোনো কিছু আমাকে ধারণ করতে সক্ষম নয়
আল্লাহ তা‘ আলা হলেন গুপ্তধন যিনি সায়্যিদিনা মুহাম্মদ ﷺ এর মাধ্যমে পরিচিত
হাদিসে কুদসী থেকে
كُنْت كَنْزاً مخفيا فَأَحْبَبْت أَنْ أُعْرَفَ؛ فَخَلَقْت خَلْقاً فَعَرَّفْتهمْ بِي فَعَرَفُونِي
উচ্চারণ : কুন্তু কনজান মাখফিয়া ফা আহবাবতু আন আ’ রাফা ফা খালাকতু খালকান ফা আরাফতাহুম বি ফা আরাফনি। (হাদিসে কুদসী )
আল্লাহ তা’ আলা বলেন “আমি ছিলাম গুপ্ত এবং আমি পরিচিত হবার ইচ্ছা করলাম , তাই আমি এমন একটি সৃষ্টি সৃষ্টি করেছিলাম যার কাছে আমি আমার পরিচয় দিয়েছি; তখন তারা আমাকে জানলো ” ।
আল্লাহ তা’আলার সাথে মাধ্যমবিহীন সরাসরি সংযোগ সম্ভব নয়। তিনি পরিচিত হয়েছেন সায়্যিদিনা মুহাম্মদ ﷺ এর মাধ্যমে। তার কোনো শরীক নেই । তার মতো কিছুই নেই ।
এই সব কিছুই হায়াতের সমুদ্রের মধ্যে। এবং আল্লাহ তা’আলা হায়াতের সমুদ্রের বাহিরে। কেননা তিনি লা শারীক। যা কিছুর জীবন রয়েছে সাথে সাথে মৃত্যুকে তার সঙ্গী করে দেওয়া হয়েছে। দয়াময় আল্লাহ তা’আলা জীবন ও মৃত্যুর বাহিরে। কোনো কিছুই তার তুলনায় আসতে পারে না।
আল্লাহ তা’আলা বলেন আমি জীবন সৃষ্টি করেছি তোমাদের অভিজ্ঞতা স্বরূপ । যাতে তোমরা জীবন ও মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে পারো। আল্লাহ তা’আলা এই সব কিছু থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।
আউলিয়াউল্লাহ ‘ লিসানুল সিদ্দিক ‘ হবার জন্য ‘লিসানুল হক‘ এর দ্বারা সজ্জিত
সুতরাং, এই ” বা ” সমস্ত বাস্তবতা বহন করছে কারণ এটি অন্যভাবে ফিরে যায়। ক্বালব, কুরআনিল মাজিদ, ও এর সবটাই লামকে সজ্জিত করছে , যা হলো লিসান আল হক্ব (সত্যের জবান ) যা সেই ওয়াল হামদ , সেইটাই ফাতিহা। ফাতিহা হলো সেই পোশাক যা সায়্যিদিনা মুহাম্মদ ﷺ কে সজ্জিত করেছে। আর উলামায়ে কেরাম (আলেমগণ) ওলীউল্লাহগণ এর বাস্তবতা জানেন। এ কারণেই তারা বলে থাকেন বী সির্রী সূরাহ আল-ফাতিহা (সূরাহ আল ফাতিহার গোপনীয়তার দ্বারা) । তাদের পক্ষে সূরাহ আল-ফাতিহার সাথে দু’আ করা করা যথেষ্ট। এটি পবিত্র কুরআন, সুরক্ষা ও শিফার সমস্ত আয়াত , আশীর্বাদ ও করুণার সমস্ত আয়াতকে আবদ্ধ করে। তারা এটি তাদের চাবি দিয়ে আবৃত্তি করেন, তাদের উপর একটি কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে এবং সেই সূরাহ দ্বারা সজ্জিত হয়েছেন । এই লিসান আল হক্বের পোশাক পরে তারা লিসান আল সিদ্দিক হয়ে ওঠেন।
﴾ وَوَهَبْنَا لَهُم مِّن رَّحْمَتِنَا وَجَعَلْنَا لَهُمْ لِسَانَ صِدْقٍ عَلِيًّا (٥٠
উচ্চারণ : ওয়া ওয়াহাবনা লাহুম মিন রাহমাতিনা ওয়া জা’ আলানা লাহুম লিসানা সিদ্দীক্বীন আ’লীয়া ।
( সূরাহ মারিয়াম ১৯:৫০ )
অর্থ : আমি তাদেরকে বিশেষ অনুগ্রহতে ভূষিত করলাম । সেইসাথে আমি তাদেরকে সত্য প্রকাশের মনোমুগ্ধকর ক্ষমতা দিয়ে সম্মানিত করলাম।
আউলিয়া (সাধুগণ) –এর কাছে আসুন, তারা ‘ বাব‘ এর তত্ত্বাবধায়ক
আমাদের জীবন সেই দরজার দিকে এগিয়ে যাওয়ার, সেই বাস্তবতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার । এটি হ’ল ক্বালব (হৃদয়) এর বর্ণনা এবং এটি সেই ক্বালব (হৃদয়) যেখানে আল্লাহ তা’ আলা আমাদের সজ্জিত করতে চান। তাই আসুন , বাব এর নিকট আসুন । তারাই সেই দরজার তত্ত্বাবধায়ক। বাব (দরজা) এর লোকেরা, তাদের জীবন এবং তাদের বাস্তবতা যা আল্লাহ তা’ আলা তাদের দিয়েছেন, তারাই হলেন সেই দরজার তত্ত্বাবধায়ক।তাই আসুন , সেই বাবে (দরজার) আসুন্ ! আপনার খারাপ বৈশিষ্ট্যগুলি ত্যাগ করে আপনার হৃদয় দিয়ে প্রবেশ করুন! এবং সঙ্গে সঙ্গে তারা আপনাকে লিসান আল হক্বের কাছে নিয়ে যেতে শুরু করেন।
সত্যের উপস্থিতিতে মিথ্যাচার বিনষ্ট হয়
সেই জানাব আল হক্ব (ঐশ্বরিক জবান ), যখন হক্ব আল্লাহ -এর এই বাস্তবতা, যখন সত্য প্রকাশিত হয়, প্রতিটি মিথ্যার মুখোমুখি হয়ে যখন সত্য প্রকাশিত হয় , মিথ্যা তার প্রকৃতিগতভাবে বিনষ্ট হয়।
﴾ وَ قُلْ جَآءَالْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَطِلُ، إِنَّ الْبَطِلَ كَانَ زَهُوقًا ﴿٨١
(১৭ :৮১) – “ওয়া ক্বুল জা আল হাক্বু ওয়া জাহাক্বাল বাতিলা, ইন্নাল বাতিলা কানা জাহোকা।” (সূরাহ :আল বনি ইসরাইল )
“এবং বলুন, সত্য এসেছে, এবং মিথ্যা বিনষ্ট হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা, [তার প্রকৃতির দ্বারা] সর্বদা বিনষ্ট হয় এবং তা বিনষ্ট হতে বাধ্য।
যখন আল্লাহর সত্য আসে তখন এর অর্থ এই সমস্ত বাস্তবতা, তারা আমাদের শিখিয়ে চলেছেন, আসুন এই ক্বালব (হৃদয়ে)। ক্বালব দ্বারা সজ্জিত হউন । যদি এই ক্বালব আপনাকে সজ্জিত করা শুরু করে এবং আপনাকে আশীর্বাদ দেয় তবে তাঁর ঐশ্বরিক আলো থেকে আপনাকে সাজাতে চলেছে। এই ঐশ্বরিক আলো হলো আল্লাহর হক্ব (সত্য)। যখন আল্লাহর হক্ব (সত্য) আসে, তখন যা কিছু মিথ্যার মুখোমুখি হয়, তা দূরে সরে যায়। এবং মিথ্যা এর প্রকৃতি দ্বারা সর্বদা বিনষ্ট হয়।
নবী সুলায়মান (আ🙂 কে সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাত এর একটি আংটি প্রদানের মাধ্যমে কর্তৃত্ব প্রদান করা হয়েছিল:
নবীর মাহাত্ম্য অজানা। এবং বেশিরভাগ ওলামা (আলেম), তারা এটি বুঝতে পারেন না এবং উপলব্ধি করতে পারেন না যে, এই সমস্ত বাস্তবতা আল্লাহ তা’ আলা এতে সজ্জিত করেছেন। তবে কেন নবীগণের কাছ থেকে কোরআনের কাসাস (গল্প)? কারণ আল্লাহ তা’আলা চান যে আহলুল তাফাক্কুর (ধ্যানী লোকেরা) নবীর ﷺ বাস্তবতা বুঝোক ।
আমরা আগে বলেছি, সৌন্দর্য, নবীর নূর এতই মহিমান্বিত, এত আশ্চর্যজনক যে আমরা যদি সেই মাহাত্ম্য বুঝতে শুরু করি তবে আমরা বুঝতে শুরু করি যে নবীরা যখন মাদাদ ও সাহায্য চেয়েছিলেন তখন তাদের কোনো না কোনো বস্তু নিদর্শন স্বরূপ দেওয়া হয়েছিল। যা সাইয়্যিদিনা সুলায়মান (আ:) বুঝেছিলেন । কারণ পরের মাসে (রবিউল আউয়াল), আমরা সূরাহ আন-নামলের বাস্তবতায় যাচ্ছি, যা ২৭ তম সূরাহ । প্রতিটি অনুষ্ঠান পবিত্র রাত হিসাবে ২৭ এর অধীনে। আর সাইয়্যিদিনা সুলায়মান (আ:) শিক্ষা দিচ্ছেন যে যখন তিনি আল্লাহ তা’আলার নিকট দোয়া করেছিলেন, ‘ইয়া রাব্বি, আমার একটা মূলকের প্রয়োজন । আমার লোকদের সাহায্য করার জন্য আমার এই দুনিয়াতে (বস্তুগত জগতে ) কিছুই নেই। এই দুনিয়াতে লোকদের সহায়তা করার কোনও অধিকার আমার নেই। এবং প্রত্যেক শয়তান (রাক্ষস) এবং সমস্ত মন্দতা আমার ও আমার সম্প্রদায়কে আক্রমণ করছে। ’এবং তাঁর দু’আতে (প্রার্থনাতে ) তাঁকে আংটি দেওয়া হয়েছিল।
আউলিয়াউল্লাহ এসে আমাদের শিখিয়ে দেন, এটাই সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ এর সুন্নত । কারণ রাসূলের রিসালাত আর মালাকুত আদি :
নবীজি ﷺ বলেন
كُنْتُ نَبِيًّا وَآدَمُ بَيْنَ الْمَاءِ وَالطِّينِ
উচ্চারণ : কুন্তু নাবীয়্যান ওয়া আদামা বাইনাল মা’ই ওয়াত তীন।
“আমি আদম (আ:) এর আগে মাটি ও জলের মাঝে নবী ছিলাম”।
সুতরাং, এর অর্থ হলো সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ এর রিসালাত কাদিম এবং মালাকুত (স্বর্গীয় রাজ্যে) তিনি আদি প্রাচীন। সেই সময়গুলোতে যখনই দুনিয়াতে
(বস্তুগত জগতে) কিছু প্রদান করতে হতো তখন তারা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ এর সুন্নাহ (ঐতিহ্য ) থেকে প্রদান করেছিলেন । যা ছিল নবীজি ﷺ অনুমোদিত এবং তাঁর সুন্নত থেকে আংটি টি দিয়েছিলেন। সাইয়্যিদিনা সুলায়মান (আ:) এর সুন্নাহের আংটিটি বুদালা, নুজাবা, নুকাবা, আওতাদ, আখিয়ার , মালাইকা (ফেরেশতা) ও জ্বিনের উপর ক্ষমতা দিয়েছে। এর অর্থ প্রতিটি কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছিল একটি আংটির মাধ্যমে ।
আমরা রাসূলের সুন্নাহকে উত্তরাধিকার করেছি যার জন্য সমস্ত নবী প্রার্থনা করেছিলেন
﴾ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ ﴿١
“তাবারকাল লাজি বিয়াদিহিল মুলকু ওয়া হুওয়া‘ আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির । ” (সূরাহ আল-মুলক)
“ধন্য তিনি, যার হাতে কর্তৃত্ব / রাজত্ব; আর তিনি সবকিছুর উপরে ক্ষমতাবান। ” ( সূরাহ আল-মুলক ৬৭ : ১ )
যখন আল্লাহ তা’ আলা আপনার হৃদয়ের কারণে আপনার হাতে তাবারাক (বরকত) খুলবেন তখন আপনার ক্বালব সেই ক্বালবের সাথে মিলছে। সেই ক্বালবে ঐশ্বরিক নূর (আলো )থেকে পূর্ণ হয়, নূর এবং শক্তি উদ্ভাসিত হতে শুরু করে। কর্তৃত্বের শক্তি নয়, তবে আল্লাহ্ তা’আলার ইজ্জত (মাহাত্ম্য ) সেই বান্দার অন্তরে সজ্জিত হয়ে তাদের হাত থেকে উদ্ভাসিত হয়ে আসছে। যখন তারা সাইয়িদিনা মুহাম্মদ ﷺ এর আংটি সুন্নত হিসেবে গ্রহণ করেন , তখন তাদের আংটির একটি শক্তি থাকে। এবং সমস্ত নবীগণ এই তাবারাকের জন্য আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা করছিলেন। এবং সাইয়্যিদিনা মুহাম্মদের (ﷺ )জাতির অধীনে ইহা আমাদের বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। আমাদের এটি উপহার হিসাবে দেওয়া হয়েছে। এটাই হ’ল নবীজির ﷺমাহাত্ম্ !
লোকজন (নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর )সুন্নাহ থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন ,কতজন সুন্নতের দিকে যাচ্ছেন? যে নবীগণ লড়াই করে আল্লাহ তা’ আলার নিকট প্রার্থনা করছিলেন।, আমাদের কিছু প্রদান করুন , যাতে আমাদের এক্তিয়ার হয় এবং আল্লাহ তা’আলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ )এর কাছ থেকে সুন্নাহ প্রেরণ করেন, এখানে সাইয়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ )এর আংটিগুলো থেকে কেবল একটি আংটি দেওয়া হয়েছে । সেই আংটি দিয়ে আপনি সমস্ত কিছু খোলেন, কেবল একটি আংটি। এবং আমাদের দেওয়া হয়েছিল সাইয়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ ) কে পুরোপুরি! আমরা শিশুদের মতো তা বুঝিনা , যে বাস্তবতা দয়াল নবীজিকে দেওয়া হয়েছে । আমরা তার মহত্ব উপলব্ধি করছি না যা আল্লাহ তা’আলা তাকে দিয়েছেন। “আমি তোমাদের আমার সবচেয়ে প্রিয়জনকে দিয়েছি, আমি তোমাদের এমন এক উপহার দিয়েছি যে আমার সমস্ত বাস্তবতা স্বর্গে বহন করে”। সাইয়্যিদিনা ” নবী মুহাম্মাদ ” (ﷺ ) এর কেবল একটি আংটি সবকিছু, সবকিছু খুলে দেবে।
” নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর উলামা ও আওলিয়া রাসূলগণের কাছ থেকে উত্তরাধিকারী“
এ কারণেই নবীজি তাঁর সাহাবীর জন্য স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে আমার উলামগণ বনী ইসরাইল এর নবীদের উত্তরাধিকারী। কেননা তাদের প্রতি শ ইহতিরাম (শ্রদ্ধা) দেখানোর জন্য যে, তারা যদি সে সময় এর হতো তবে তারাও নবী হতো । সে কারণেই তিনি সেই সঙ্গীকে বলেছিলেন:
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ ” لَوْ كَانَ بَعْدِي نَبِيٌّ لَكَانَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ”
(3686)(حديث حَسن رواه أحمد والطِبراني و في صحيح الترمذي)
‘আমার পরে যদি একজন নবী থাকতেন তবে তা হতো সাইয়্যিদিনা উমর ফারুক।’(তিরমিজি শরীফ) (৩৬৮৬ )
শ্রদ্ধার বিষয়টি হলো নবীজি ﷺ এর পরে কোনো নবুয়ত নেই । কিন্তু তাদের দরাজাত এতটাই উঁচু যাদেরকে আমি আমার সুন্নাহ ও বাস্তবতা দিয়ে সজ্জিত করেছি এবং তারা আমার আশেকীন (প্রেমিক)। তারা কেবলমাত্র বর্ণিত এই ক্বালব (হৃদয়) এর বাস্তবতা বহন করে। তারা আমার প্রেমিক, আপনি কি মনে করেন যে মালাকুতের (স্বর্গীয় রাজ্য) সুলতানের প্রেমিকদের কোনো কর্তৃত্ব নেই ? এবং নবীজি ﷺ বলেছিলেন যে , তারা বনি ইস্রায়েলের নবীদের মতো ।
عُلَمَاءِ أُمَتِيْ كَأَنْبِيَاءِ بَنِيْ إِسْرَائِيلْ
উলামা এ উম্মতি কা আ ‘নবীয়াকা বনি ইসরাইল ।
“আমার উম্মতের আলেমগণ বনী ইস্রায়েলের নবীগণের মতো।” ( হযরত মুহাম্মদ ﷺ)
“আল্লাহ তা‘আলা তার আউলিয়াগণের হাতে ক্ষমতা দিয়েছেন“
তারা বনি ইসরাইল এর নবীদের মত ,কেন ? এই আংটি দিয়ে তারা পর্বতমালাও সরাতে পারেন । এর অর্থ হলো নবী যদি তাদের হাত অনুমোদন করেন, ” “ইন্নাল্লাজিনা ইউ বাইওনাকা ইন্নামা ইয়ুবায়িআন আল্লাহ …” যদি আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর থাকে এবং নবীজির ﷺ এর হাত তাদের হাত এর উপর থাকে , তারা যা করেন তা স্বর্গের সুলতানের ক্ষমতার মাধ্যমে’ই করেন।
﴾إِنَّ الَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ اللَّـهَ يَدُ اللَّـهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ ۚ فَمَن نَّكَثَ فَإِنَّمَا يَنكُثُ عَلَىٰ نَفْسِهِ ۖ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِمَا عَاهَدَ عَلَيْهُ اللَّـهَ فَسَيُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا ﴿١٠
” ইন্নাল্লাজিনা ইউ বাইওনাকা ইন্নামা ইয়ুবায়িআন আল্লাহ আল্লাহা ইয়াদুল্লাহি ফওকা আইদীহিম , ফামান নাকাতা ফা ইন্নামা ইয়ানকুতু ‘আলা নাফসিহি, ওয়া মান আওফা বিমা’ আহাদা ‘আলাইহু আল্লাহ ফাসাইও তেহি আজরান’ আজিমা”। (সূরাহ আল-ফাতাহ)
নিশ্চয়ই, যারা আপনাকে বাইয়াহ (আনুগত্যের শপথ) দেয় (হে মুহাম্মদ) – তারা আসলে আল্লাহকে বাইয়াহ দিচ্ছে। আল্লাহর হাত তাদের হাতে। সুতরাং, যে ব্যক্তি তার অঙ্গীকার / শপথ ভঙ্গ করে, তা কেবল তার ক্ষতি করে। আর যে ব্যক্তি তাদের প্রতিশ্রুতি (বাইয়াহ) পূর্ণ করে যে প্রতিশ্রুতি তারা আল্লাহ – কে দিয়েছিলো , তিনি তাকে মহাপুরস্কার দান করবেন। ” (সূরাহ আল-ফাতাহ)
নবী মুসা (আ:) সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ এর সুন্নাহ থেকে একটি ছড়ি (‘আছা ) দিয়ে মহাসাগর উন্মুক্ত করেছিলেন
অতঃপর নবীজি ﷺ তার (দরবেশগনদের ) একটি ‘আছা’ (ছড়ি ) দিয়েছেন। নবী মুসা (আঃ) একটি আছার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন এবং তিনি যখন আল্লাহর তরফ থেকে পেয়েছিলেন, এর অর্থ এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ হিসাবে এসেছিল। এবং সেই আছার সাহায্যে, তিনি নিজের জাতিকে বাঁচাতে, ফারাজ হতে, মুক্ত হতে অসুবিধার মহাসাগরকে উন্মুক্ত করেছিলেন । কি থেকে? কি আছা? কারণ একমাত্র রিসালাত (মেসেঞ্জারশিপ) হলেন সাইয়্যদিনা মুহাম্মদ (ﷺ) , অন্যরা সকলেই শুধুমাত্র প্রতিনিধি ।
﴾ فَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنِ اضْرِب بِّعَصَاكَ الْبَحْرَ ۖ فَانفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَالطَّوْدِ الْعَظِيمِ ﴿٦٣
“ফা আহায়েনা ইলা মুসা আনিদ্রিব বি’আসাকা আলবাহরা, ফানফালাকা ফাকানা কুল্লু ফিরকিন কাততাওদিল ‘ আ ‘জীম। (সূরাহ আশ-শু’আরা) (২৬:৬৩ )
“অতঃপর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম ,” তোমার লাঠি দিয়ে সমুদ্রকে আঘাত কর, “এবং ইহা খণ্ডিত হয়ে গেল এবং প্রতিটি অংশ ছিল এক বিশাল উঁচু পাহাড়ের মতো।” (সূরাহ আশ শু’ আরা , (২৬:৬৩ )
সমস্ত নবী ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাদের ঈমান পূর্ণ করেছেন
আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম রয়েছে । আল্লাহর একমাত্র নবী। আল্লাহর একমাত্র বিশ্বাসী রয়েছে । তারা সকলেই সাইয়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর বাস্তবতার অধীনে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। এই কারণেই ইসরা ওয়াল মিরাজ , তাদের মারিফাহ (জ্ঞানতত্ত্ব) বোঝার জন্য, যে আমার সুলতান এসে দাঁড়ালে, তার পিছনে দাড়াও ,প্রার্থনা করো । এবং তিনি যখন অনুমতি দেন তখন তারা মুহাম্মাদানের সালাত আদায় করেন।
তারা সালাত আদায় করলেন এবং তাশাহুদে তাদের শাহাদা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ কে দিতে হয়েছিল । তারা কীভাবে নামাজ পড়েছিলেন ? তারা আমাদের ইসলামিক নামাজ আদায় করেছিল। তাদের শাহাদা দিতে হয়েছিল যে আস সালামু আলাইকা আইয়ুহান নবী ওয়া আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়া রাসূলু’ হিসাবে।
السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ …وَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إلاَّ الله وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًاعَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
আসসালামু আলাইকা ইয়া আইয়্যুহান্নাবিয়্যু ওয়া আশহাদুআন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু
হে আল্লাহর নবী সালাম ! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল।”
সমস্ত ১২৪ ,০০০ নবী সালাত আদায় করলেন। তারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন । তারা তাদের শাহাদা (বিশ্বাসের সাক্ষ্য) দিয়েছিলেন এবং তারা তাদের মারিফায় পৌঁছেছিলেন । এবং তারপর নবীজি (ﷺ )চলে গেলেন। কেন তাদের সাথে দেখা করতে যেতে হয়েছিল? তিনি আল্লাহ তা’আলার সাথে সাক্ষাত করেছেন , “তবে রহমত হিসাবে, দয়া হিসাবে, আমি আপনার বিশ্বাস পূর্ণ করব”। আল্লাহ তা’আলা তাকে প্রেরণ করেছিলেন, ‘যান তাদের জন্য দোয়া করুন, তাঁদের শাহাদা দিন”। ‘তদের সকলকেই মুসলমান করে দিন, দ্বীন পূর্ণ করুন এবং আমাকে দেখতে আসুন’।
নবীজি মুহাম্মদ ﷺ এর ছড়ির ক্ষমতা ই হচ্ছে আওলিয়া গণের ছড়ির ক্ষমতার উৎস :
নবী মুসা (আ:) আছা ও ছড়ির জন্য প্রার্থনা করেছিলেন, সেই ছড়ি দিয়ে অজ্ঞতাকে ও মহাসাগরকে বিভক্ত করেন ।
(কোরআন, ২৬ ::৬৩ )।
নবী মুসা (আঃ) তার আছা নিক্ষেপ করলেন এবং তা প্রত্যেক যাদুবিদ্যার হত্যাকারী ও ধ্বংসকারী হয়ে উঠল।
﴾ وَأَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَلَمَّا رَآهَا تَهْتَزُّ كَأَنَّهَا جَانٌّ وَلَّىٰ مُدْبِرًا وَلَمْ يُعَقِّبْ ۚ يَا مُوسَىٰ أَقْبِلْ وَلَا تَخَفْ ۖ إِنَّكَ مِنَ الْآمِنِينَ ﴿٣١
(২৮ :৩১) – “ওয়া আন আলকি‘ আসাকা ফালাম মা রা আহা তাহতাজু কা আন্নাহা জান্নানউ ওয়াল্লা মুদবীরানু ওয়া লাম ইউ ইয়াক্বাকিব;
(নির্দেশ দেওয়া হলো )”তোমার লাঠি নিক্ষেপ করো। ” লাঠি ফেলার পর একে সাপের ন্যায় ছুটাছুটি করতে দেখে মুসা উল্টো দৌড় দিলো, পেছন দিকে আর তাকালো না। তাকে বলা হলো ” হে মুসা ! ফিরে এসো। ভয় করো না। তুমি সম্পূর্ণ নিরাপদ। (সূরাহ কাসাস , ২৮:৩১)
সায়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর উলামাদের (আউলিয়াগনের ) ছড়ির সম্পর্কে আপনার কী ধারণা? এটিতে কোনও যাদু নেই, এর মধ্যে সমস্ত যাদু ধ্বংস করার ক্ষমতা নেই? ইহার উপর আল্লাহ তা’আলার কোন ইজ্জত ও শক্তি থাকতে পারে না ?যে তাদের উপস্থিতিতে যাদু করার কোনও কর্তৃত্ব নেই? তাদের হাত যদি সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ ﷺ এর হাতের উপরে থাকে যার হাতের উপর স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা আছেন। তাদের হাতে তারা সুন্নাহ বহন করেন (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ) এবং তারা বনী ইস্রায়েলের সমস্ত নবীগণের বাস্তবতাকে বহন করেন।
এই পৃথিবীতে সর্বদা ১২৪ ,০০০ আউলিয়াউল্লাহ থাকতে হবে এবং তারা বনি ইস্রায়েলের নবীগণের মহিমায় ও শক্তিতে চলেন । তারা (বনী ইস্রায়েলের নবীগণ ) নবীজির ﷺ সুন্নাহর জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। । তারা একটি (ছড়ির ) জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। তারা একটি আংটির জন্য প্রার্থনা করেছিলেন এবং আমরা এটি উত্তরাধিকার হিসাবে পেয়েছি, বেশিরভাগ উলামা (আলেমগণ) এটি ছেড়ে দেন। বেশিরভাগ লোকেরা তাদের আংটি পরেন না, বেশিরভাগ লোকজন নবীজি ﷺ আমাদের যা দিয়েছেন সেই সমস্ত সুন্নত ত্যাগ করে চলেছেন । কারণ আমরা এর মহত্ব বুঝতে পাড়ছি না ।
আমরা প্রার্থনা করি যে আল্লাহ তা’আলা আমাদের সেই আলো থেকে সজ্জিত করুন। সেই আলো থেকে আমাদের আশীর্বাদ করুন। আমাদের সেই ভালবাসা এবং সেই বোধগম্যতা বৃদ্ধি করুন, যাতে আমরা আল্লাহ তা’আলা আমাদের যেখানে পৌঁছাতে চান সেখানে পৌঁছাতে পারি। আমিন।
সুবহানা রাব্বিকা রাব্বিল ‘ইজ্জতী’ আম্মা ইয়াসিফুন, ওয়া সালামুন ‘আলাল মুরসালীন, ওয়ালহামদুলিল্লাহি রাব্বিল‘ আলামীন। বি হুরমতি মুহাম্মদ আল-মুস্তফা ওয়া বি সির্রী সূরাহ আল-ফাতিহা।
Subhana rabbika rabbal ‘izzati ‘amma yasifoon, wa salaamun ‘alal mursaleen, walhamdulillahi rabbil ‘aalameen. Bi hurmati Muhammad al-Mustafa wa bi sirri surat al-Fatiha.
Original Date of Suhbah: November 5, 2017
Related Articles:
- All of Islam is Tabarak – Seeking Blessings, Ka’bah, Black Stone
Glory to the Hands with the Authority over Mulk wal Malakut (Heaven and Earth) 36:83 - Sunnah P.2 – Protection Against Bad Energy (Siwak, Ring, Cane, Body Energy, Wudu)
- Companions and Levels of the Heart – Sayyidina Abu Bakr, Sayyidina Ali, Enter into the Kawthar
- 4 Khalifa of Prophet (saws) and the Levels of the Heart
- 7 Maqams of Surat al Fatiha a Belierver Must Traverse – Part 1
- The Muhammadan Government: Hierarchy of Saints
Please Donate and support us to spread these heavenly knowledges.
Copyright © 2020 Naqshbandi Islamic Center of Vancouver, All Rights Reserved.